দুটি কবিতা

লিখেছেন:সুদীপ কুমার চক্রবর্তী

 

 

প্রেম সূত্রের সংশোধন 

 

সমবিন্দু সমাপতন এসব জ্যামিতিক উপাখ্যান
এখন ভুল অঙ্কের অনুশীলন। অথচ
কষে চলেছি বিনিদ্র রাত শূন্য সাদা পাতায়।
মেলে না কদাচিৎ মেলে না ভুল এ অঙ্কের নিয়ম।
 
তবুও জীবন !
এখানে পথের মানচিত্র হারিয়ে পথচারী হয়ে যায় বোহেমিয়ান।
 
যাযাবর মন ওড়ে বন জ্যোৎস্নায় 
এখনও আগন্তুক আমি এই হেমন্তের হিমেল কুয়াশায়।
খুঁজেছি তোমাকে অনেক প্রতীক্ষার পরেও
কোনো গ্রীক সুন্দরীর মতো অলিভ পাতায়।
 
চলমান এ সময়ের দিশাহীন নাবিক আমি
চারদিকে তরঙ্গের উথাল পাথাল।
কোথায় সে আশ্চর্য ফেনিল সাগর
তুমিতো কোথাও নেই মৎসকন্যা র বেশে
সীমাহীন ভুলের সে দ্রাঘিমা রেখায়।
 
এখন জটিল অঙ্কের সে অন্তিম অধ্যায়
স্মৃতি বিস্মৃতির মর্মর মূর্তি তোমার অমিত ভাস্কর্যে  - 
প্রাণহীন বসন্তপ্রেমী।
 
এতদিনে বুঝেছি প্রেম সূত্র বিচিত্র
ঋণাত্মক সংখ্যা মাত্র -
সমান্তর রেখচিত্রের জ্যামিতিক প্রণালী।

 

মৎস্য শিকার 

 

মৎস্য শিকারের নিমিত্ত ছিপ ফেলে বসে আছি কালীদহে - মগ্নপ্রহর। ফৎনা নড়ছে...
 
এই জলে পড়ে একদিন ডুবে গেছে অলৌকিক প্রতিবিম্ব এক নিঃসঙ্গ শুকতারার। 
হতে পারে তা প্রায় এক যুগ আগেকার।
যদি উঠে আসে সূচালো বড়শিতে আবার !
 
ওদিকে বাঁকের মুখে বিরিঞ্চিবাবার মঠ
অষ্টপ্রহর চলেছে হরিনাম সংকীর্তন।
পাঁচমুড়ো অশ্বত্থগাছ - পরিত্যক্ত মহাশ্মশান।
সারি সারি স্মৃতির জীর্ণ ফলক
পলেস্তারা খসা ভাঙা মঞ্চ মন্দির - মৃতের উদ্যান।
 
দুপাশের সবুজ প্রান্তর - অন্নপূর্ণার পর্ণ কুঠির।
এখানে ওখানে এখন মাথা তুলে দাঁড়িয়ে ইট কাঠ 
পাথরের সৌধমিনার।
 
শতাব্দীর রাত্রি মিশে আছে এই কালীদহের জলে - 
এখানের স্থির কালো জলে নিশ্চিন্তে শুয়ে থাকে পূর্ণিমার চাঁদ।
অবিশ্বাস্য বনানী ঘুমিয়ে থাকে তার অতল গভীরে।
মাৎস্যন্যায় চলেছে এখানে নিত্য নৈশ অভিযানে 
জলজ যাপনে অতি সন্তর্পনে।
 
ফাৎনা নড়ছে............
এইবার নিশ্চিত মৎস্য শিকার - নিশাচর।
ছেয়ে আছে চরাচর - রোমাঞ্চকর নীল অন্ধকারে।

 

 

0 Comments
Leave a reply