শহরতলি। তবে আধুনিক জীবনের ঢেউ ভালোই এসে পড়েছে। জনবসতি দিনে দিনে বেড়ে চলেছে। এখনও দু-চারটে টিনের বা টালির চাল আছে বটে, তবে অধিকাংশই ছাদ আঁটা একতলা দুতলা বাড়ি। কয়েকটা তো বেশ সাজানো গোছানো। ফুল ফলের বাগান ঘেরা। মধ্যবিত্ত বাঙালি কলকাতাতে আর ততটা এঁটে উঠতে না পেরে এই ধরনের এলাকায় উঠে আসছেন। দু আড়াই কাঠা জমি কিনে নিজের মতো সাজিয়ে গুছিয়ে বাড়ি বানাচ্ছেন।
কয়েক বছর আগেও এখানে পঞ্চায়েত ছিল। এখন মিউনিসিপ্যালটি। মাটির রাস্তা শুধু ইঁটের হয়নি, তার ওপর পিচ আর খোয়ার আস্তরণ পড়েছে। প্রতি মোড়ে একটা করে ফ্লুরোসেন্ট বাল্ব।
আজ কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। এখানকার দুর্গামন্ডপটি অক্ষত রেখে সেখানেই মা লক্ষ্মীর আবাহন হয়েছে। আনুষঙ্গিক সাজসজ্জা, আলোকমালা।
তাই ঝুপ করে সন্ধ্যা নেমে এলেও রাস্তা চিনে নিতে খুব একটা অসুবিধা হল না অনীকের।
পূর্ণিমার ঝর্ণাধারায় এখনও ভাসেনি পৃথিবী। গাছপালা ঘরবাড়ির ফাঁক দিয়ে গ্রাম্য যুবতীর কৌতূহলে রুপোর বলয়টা সবেমাত্র উঁকিঝুঁকি মারছে। একটু পরেই তার যৌবনের দীপ্তি রাতের চরাচর ভাসিয়ে দেবে। সৌন্দর্য্যে, মাধুর্যে, স্নিগ্ধতায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে পৃথিবী। দিনের সমস্ত রুক্ষতা, মলিনতা মুছে গিয়ে অপূর্ব প্রসন্নতায় শান্ত হবে, তৃপ্ত হবে তার সর্ব অঙ্গ।
বছর দুয়েক আগে অনীক একবারই এখানে এসেছে। তবু বেশ মনে আছে জায়গাটা। শিয়ালদহ থেকে ব্যারাকপুর পর্যন্ত ট্রেনে এসে অটোরিক্সায় আধঘন্টা। তারপর হাকিমপুর। এবার কিছুটা পায়ে হাঁটা পথ। সেটা পেরোলেই অনীক পৌঁছে যাবে প্রিয় বন্ধু ঋদ্ধির বাড়ি।
অনীক আর ঋদ্ধি সহপাঠী ছিল। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক এমন কি কলেজের কয়েকটা বছরেও। তারপর ঋদ্ধি এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেয়ে গ্রামের মেয়ে পূর্ণিমাকে বিয়ে করে। অনীক চাকরি পায় এর বেশ কিছুদিন পর, রাজ্য সরকারে। চাকরি পাবার আগে সে প্রচুর টিউশনি করত। সেই সূত্রেই সংগীতশিল্পী চন্দ্রিমার সঙ্গে তার পরিচয়। পরিণয়। এবং সংসার নামক পদ্মপত্রে টালমাটাল জলবিন্দুর জীবন।
পায়ে হাঁটা পথটা শেষ করে অনীক মেন গেটের সামনে এসে হাজির হল। সিকিউরিটি গার্ড সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে আসে। পরিচয় কি! কোথায় সে যেতে চায়? অনীক নিজের নাম বলে, ঋদ্ধির নামও। সিকিউরিটির লোক ছেড়ে দেয় পথ। ঢোকার আগে শুধু ভিজিটার্স রেজিষ্টারে একটা সই করতে হল।
কমপ্লেক্সের ভিতরটা ভারী সুন্দর। চারপাশে গাছ-গাছালি। মাঝে মাঝে ঘাসে মোড়া ছোট ছোট ফাঁকা জমি। সুন্দর একটা পার্কও আছে। রাস্তাঘাট ঝকঝকে, নতুন। কোনও হাইরাইজ নেই। একটু ছাড়া ছাড়া এক একটা বাংলো টাইপের বাড়ি। শান্ত স্নিগ্ধ মনোরম। সবগুলোই স্টাফদের।
ঋদ্ধির বাড়িটা চিনে নিতে অনীকের অসুবিধা হল না। অতীতের অভিজ্ঞতা তো ছিলই। সেইসঙ্গে ছিল মাঙ্গলিক আয়োজনের চিহ্ন। ঢোকার দরজার দুধারে আম্রপত্র, কচিডাব, মাটির ঘট সহ দুটি ছোট কলাগাছ। কাগজের শিকলিও ঝোলানো হয়েছে দরজার ওপর। চৌকাঠে সুন্দর করে আলপনা।
কলিংবেলের সুইচে হাত দেয় অনীক।
সঙ্গে সঙ্গে পূর্ণিমার কন্ঠ। 'কে?'
অনীক নিজের পরিচয় দেয়।
দরজা খুলে যায়।
ও মা! অনীকদা! কতদিন পর আসছ! কাল আমিই তো ওকে বললাম ফোন করতে!... উষ্ণ অভ্যর্থনা জানায় পূর্ণিমা।
– হ্যাঁ, তোমরাও তো আমাদের বাড়ি আসনি অনেকদিন! কথার কথা বলে অনীক।
– কি করে যাব বল! ওর যা কাজ! কখন কোথায় থাকে তার ঠিক নেই! অফিস থেকে যখন যেখানে পারছে পাঠিয়ে দিচ্ছে!...
পূর্ণিমার সরল বাক্যধারা অনীকের ভালো লাগে। মুগ্ধ দৃষ্টিতে সে তাকিয়ে থাকে মাঝবয়সী এই রমণীর দিকে। আহামরি সুন্দরী নয়। কিন্তু কী অপূর্ব পবিত্রতা বেষ্টন করে আছে তাকে! অফ হোয়াইটের সুন্দর একটা তসরের শাড়ি পরেছে। তার সঙ্গে ম্যাচ করে মেরুন রঙের শিল্কের ব্লাউজ। পায়ে আলতা। হাতে শাঁখা পলা নোয়া চুড়ি। কানে, গলায় আরও কিছু অলংকার। মাথায় শ্যাম্পু করেছে। এলো চুলের রাশি পিঠ ছাপিয়ে নিতম্ব ছুঁয়েছে। সিঁথিতে উজ্জ্বল সিঁদুরের রেখা। কপালে বড় লাল গোল টিপ।
কোনওদিন অনীক তার স্ত্রীকে এইভাবে দেখেনি। জিন্স আর সালোয়ার কামিজেই সে স্বচ্ছন্দ। কালে-ভদ্রে শাড়ি পরলেও এই আভরণ, প্রসাধন চন্দ্রিমা ভাবতেই পারে না।
ঘরে ঢুকে অনীককে বসতে বলে ফ্যানের সুইচটা অন করে পূর্ণিমা। অনীকের স্ত্রী-কন্যার খোঁজ নেয়। অনীক যতটা পারে সংক্ষেপে উত্তর দিয়ে ঋদ্ধির খোঁজ নেয়।
– ও একটু বেরিয়েছে। বিকেল থেকে পুরোহিতের সন্ধান করতে হচ্ছে!
– এবার নিশ্চয়ই ফিরবে! অনীক আশ্বাস দেয় পূর্ণিমাকে। তারপর তাদের ছেলের খোঁজ নেয়।
– ওর তো এটাই ফাইনাল ইয়ার! কদিন পরেই পরীক্ষা! দুর্গাপুজোর সময় এসে মাত্র তিন দিন থাকল! কত করে বললাম, আর কটা দিন কাটিয়ে যা! কোনও কথা শুনল না। পড়ার নাকি ভীষণ চাপ!... ছেলের সম্পর্কে আরও অনেক গল্প করে গেল পূর্ণিমা। একটু পরে বলল, চলো আমার ঠাকুরঘরটা দেখবে।
গতবারই অনীক এসে দেখেছে এই বাড়িতে শোবার ঘর মোট দুটি। এছাড়া ছোট একটা ঘর, পূর্ণিমার ঠাকুর ঘর। তাছাড়া ডাইনিং কিচেন আর বাথরুম কাম টয়লেট। এবার দেখল বড় একটা ঘর দেবতারা দখল করেছেন। সেই ঘরের মাঝখানে লক্ষ্মীমূর্তি পাতা। চারপাশে আরও অনেক দেব-দেবী। তবে আজ যেহেতু লক্ষ্মীপূজা, তাই লক্ষ্মীরই গুরুত্ব। পূজার অজস্র উপকরণ। অনীক হাঁ করে তাকিয়ে থাকে প্রথমে। তারপর জোড় হাতে প্রণাম করে দেবীর উদ্দেশ্যে।
পূজার ঘর থেকে বেরিয়ে আবার বসার ঘরে যায় অনীক। পূর্ণিমাকে বলে, 'ঋদ্ধি তো এখনও ফিরল না!'
– কি চিন্তার কথা বলো তো! আমি সেই সকাল থেকে উপোস করে আছি! ও-ও তাই! পুজো হলে তবেই তো আমরা জল খেয়ে মুখে কিছু দিতে পারব!
– তাই বুঝি! কিন্তু পুরোহিত না পেলে!
– ও মা! অমন অলক্ষুণে কথা বলোনা! পুরোহিত পাবে না কেন! নিশ্চয়ই পাবে।
অনীক বোঝে বেফাঁস কথা বলে ফেলেছে। তাই কথা ঘোরাবার চেষ্টা করে। 'তোমার কর্তাটি এখন ঠিক কোথায়?'
– তুমি অটোয় এসে এক নম্বর গেট দিয়ে ঢুকেছ। এর ঠিক উল্টোদিকে দু'নম্বর গেট। ওখানেই একটা চায়ের দোকানে…
– ঠিক আছে। আমি মোবাইলে কনট্যাক্ট করে নিচ্ছি… বলতে বলতে অনীক বেরিয়ে পড়ে।
রাস্তায় এসেই তার দীর্ঘশ্বাস পড়ে। চন্দ্রিমা বেশ পূর্ণিমার মতো হতো! ধর্মপ্রাণা, কল্যাণী! শুচিশুভ্র পবিত্রতার এক জীবন্ত মূর্তি। এর আগেও যখন সে এখানে এসেছে পূর্ণিমাকে পূজারিণী মূর্তিতে দেখেছে। সত্যনারায়ণ বা এরকম কোনও একটা পুজো ছিল সেদিন। বেশ কয়েকজন অতিথি উপস্থিত ছিলেন। ঋদ্ধির আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মীরা। পূর্ণিমার আন্তরিকতায় অনীক আপ্লুত হয়ে গিয়েছিল। অনীকদের বাড়িতে তো এসব পুজো-আচ্চার ব্যাপার নেই! বছরে একবার মেয়ের বার্থডে সেলিব্রেশন। সেখানে শুধুই মেয়ের বন্ধুরা। আর মাঝে মাঝে চন্দ্রিমার দেওয়া পার্টি। ঢালাও খানাপিনা। সেখানেও শুধু চন্দ্রিমার সতীর্থরা। অনীকের যে দু চারজন বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, তারা সেখানে অপাংক্তেয়। দু একবার তাদের নেমন্তন্ন করার কথা ভেবেছে অনীক। চন্দ্রিমাকেও বলেছে। কিন্তু সে আগ্রহ দেখায়নি।
রাস্তায় লোকজনের হাঁটাচলা এবার কিছুটা কমতে শুরু করেছে। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাতের হাতছানি। অনীক মনে মনে সময়টা একটু হিসেব করে নেয়। আরও ঘন্টা তিনেক সে থাকতেই পারে। শিয়ালদহ যাবার ট্রেন পাওয়া যাবে রাত এগারোটা পর্যন্ত। উল্টোডাঙা স্টেশনের কাছেই তার ফ্ল্যাট। কোনও অসুবিধা হবে না।
হাঁটতে হাঁটতে অনীক মাথা তুলে তাকায় চারপাশে। রাতের রাণী এখন যৌবনের পূর্ণতায় লাস্যময়ী। নরম মিষ্টি আলোয় পৃথিবী স্নান করছে পরম তৃপ্তিতে। অনীকও সিক্ত হয়। তীব্র আবেগে পান করতে থাকে সৌন্দর্য্য-সুধা। এমনিতে তার গলায় গান শোনা যায় না। কিন্তু এই মুহূর্তে সে গুনগুন করে গান না গেয়ে থাকতে পারল না। 'আজ জ্যোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে…'
পূর্ণিমার বলে দেওয়া জায়গাটায় অনীক প্রায় পৌঁছে গেছে। কমপ্লেক্সের বাউন্ডারি ওয়ালের বাইরে দু নম্বর গেটের অদূরে ওই তো সেই চায়ের দোকান।
দোকানের কাছে গিয়ে দেখে তরুণী দোকানীর সঙ্গে ঋদ্ধি হাসতে হাসতে কোনও একটা বিষয়ে গল্প করছে। অনীককে দেখতে পেয়েই ঋদ্ধি উঠে এলো। 'কি রে! কখন এলি?'
– এই একটু আগে।… বলতে বলতে অনীক বন্ধুর কাছে জানতে চায়, সে এত হাসছে কেন?
ঋদ্ধি হেসেই চলে। 'শোননা এর কথা! বলছে, আগে যদি ভট্টাচার্যদাকে বলতেন একটা পাঁইট দেব, ভট্টাচার্যদা বিকেলেই এসে পুজো করে যেত!'
এবার অনীকও হাসলো।
তারপর ঋদ্ধি আর তরুণীর দিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে দোকানের চারপাশ দেখতে লাগল। বেশ ছিমছাম দোকান। শুধু চা নয়, টুকিটাকি অন্যান্য খাবার-দাবারও আছে। একটা কাঁচের ফ্রিজ কোল্ড ড্রিংকে ঠাসা। আর একটা শো কেসে নানা রকম স্ন্যাক্স। বেশ কিছু মনোহারি দ্রব্যও আছে।
দোকান থেকে চোখ সরিয়ে ঋদ্ধির দিকে মনোযোগী হয় অনীক। 'বল কি খবর? ভালো আছিস তো?'
– ওই আছি আর কি! বলেই ঋদ্ধি জিজ্ঞেস করে, 'পূর্ণিমাই বোধহয় তোকে পাঠালো?'
– না না, আমিই আসলাম।
– চা-টা কিছু খেয়েছিস! নাকি তোকেও উপোস করতে হবে?
হঠাৎ এরকম প্রশ্নে অনীক অবাক হয়। দ্বিধা-জড়ানো গলায় বলে, 'না, চা খাওয়া হয়নি!'
– জানি তো! রান্না করা কোনও খাবার তো দেবেই না! এমনকি চা বিস্কুটও না!
কিছুই বুঝতে পারে না অনীক।
– চ, একটু গলা ভেজাই। পেছনের ঘরটায় সব ব্যবস্থা আছে!... বলতে বলতে দোকানীর দিকে তাকিয়ে ঋদ্ধি চোখের ইঙ্গিত করে। দোকানীও যেন তৈরিই ছিল! লুফে নেয় ইঙ্গিত।
অনীক হাঁ করে দেখতে থাকে ক্রেতা-বিক্রেতার কান্ড। ইঙ্গিতপর্ব মিটলে ঋদ্ধি আবার তাকায় অনীকের দিকে। বলে, 'বামুন আসবে সেই রাত দশটায়। পুজো না হওয়া পর্যন্ত কারোর কিছু খাওয়া চলবে না। পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া হলে তবেই প্রসাদ পাওয়া যাবে।
– তুই তাহলে!...
– আমি দুপুরে এখানে এসে মাংস ভাত খেয়ে গেছি। তারপর কাছেই একটা ক্লাবে গিয়ে আড্ডা মারলাম। একটু আগে পুরোহিতের খোঁজ নিয়ে সবেমাত্র ভাবছি একটা ওয়াইন নেব। যাক ভালোই হল! তুই এসে গেছিস! একসঙ্গে জমবে ভালো!
চাঁদের স্নিগ্ধ আলো হঠাৎ কেমন ম্লান, বুুড়িয়ে যাওয়া মনে হয়। অনীক কোনও কথা খুঁজে পায় না। ঋদ্ধিকে শুধু অনুসরণ করে। ঘুপচি একটা ঘরে ছোট্ট একটা টেবিলের ব্যবধানে ঋদ্ধির মুখোমুখি বসে। ক্ষীণ আলোয় যথাসাধ্য দেখে বন্ধুর মুখ। সেখানেও ক্লান্তি আর অবসাদ। অবিরত আত্মদহনের সুস্পষ্ট ছাপ।
অনীক দীর্ঘশ্বাস ফেলে। আবার।
ঋদ্ধি বোধহয় অনুমান করে বন্ধুর ভাবনাস্রোত। ম্লান হাসি খেলে যায় তার ঠোঁটে। সে বলতে শুরু করে, 'আমার আর কি করার আছে, বল! দুদিন ছাড়া শুধু পুজো আর পুজো! বার-ব্রত, উপোস! মাসে অন্তত দশ দিন। এইভাবে কি চলতে পারে!'...
অনীক চুপ করে থাকে। ঋদ্ধির এই কথারও কোনও উত্তর খুঁজে পায় না।
একটু পরে দোকানী এক প্লেট চিকেন পকোড়া তাদের সামনে রেখে যায়। তারপর একটা ওয়াইনের বোতল, মিনারেল ওয়াটার, আর দুটো গ্লাস। জিনিসগুলো রাখার সময় তার উদ্ভিন্ন বক্ষের অনেকটাই প্রদর্শিত হয়।
ওয়াইন আর পকোড়া খেতে খেতে আবার কথা শুরু হয় দুজনের। ঋদ্ধিই মূলত বক্তা। অনীক শ্রোতা। 'তুই ভাবতে পারবি না, পুজো আচ্চা ধর্ম-কর্মের সঙ্গে ইদানিং ওর কি বাতিক হয়েছে! আগেও ছিল। করোনার পর বহুগুণ বেড়ে গেছে। বাজার থেকে আনাজপত্র কিনে আনলে অন্তত ঘন্টাখানেক ধরে ধোবে। তারপর ফ্রিজে তুলবে! মুদিখানার জিনিসপত্রও তাই! চিনি পর্যন্ত ধুতে পারলে ভালো হয়! আর দশ মিনিট অন্তর একবার করে সাবান জলে হাত ধোওয়া চাই। জল ঘেঁটে ঘেঁটে হাতে-পায়ে হাজা ধরে গেছে, দেখেছিস তো?'
অনীক ঘাড় নাড়ে। দেখেনি। পূর্ণিমাকে এত খুঁটিয়ে দেখার কথা তার মাথাতেই আসেনি।
– ভাবছি একটা সাইকায়াট্রিস্টের কাছে যাব। অফিসে কথা বলে ভালো একজনের সন্ধানও পেয়েছি। কিন্তু ও রাজি হবে কিনা সন্দেহ! কি বলে জানিস! তুমি আমাকে আর সহ্য করতে পারো না! সেই জন্য এই সব বলছ! আমাকে আর তোমার ভালো লাগে না। তাই আমার শুধু খুঁত ধরো!...
ঋদ্ধি বলে চলে। অনীকও শুনতে থাকে। শুনতেই থাকে…