১.
ঈশ্বর কামুক খুব। কাল রাতে যেভাবে সঙ্গম
করলেন টানা তিন ঘণ্টা, কুমারসম্ভব তার
উদাহরণ ছিল না। সেখানে পার্বতী
বেহুঁশ ছিলেন টানা তিনদিন। কাল তা ছিল না।
ঈশ্বর পিতার প্রতিমূর্তি। তার পরকীয়া দেখা
শিষ্টাচারাতীত। কিন্তু দেখে ফেললাম।
এই অপরাধে সারারাত নিদ্রাহীন।
চোখ বুঁজলেই দেখি, পৃথিবী দুলছে। যেন ঘোর
ভূমিকম্প। ফলে, চোখ খোলা রাখি। এইসব কথা
বলতে পারি না ডাক্তারকে।
সব দেখে, শুনে, তিনি বললেন, ঈশ্বর আছেন।
এ যাত্রায় আপনাকে বাঁচিয়েছেন তিনিই। আমি
বিমূঢ় ও হতবাক। সর্বযামী তিনি, ঈশ্বর কি
জানেন, গোপনে তার সঙ্গম দেখেছি ?
২.
পরীক্ষায় ফেল করলেন ঈশ্বর। ফলত, তাকে
বলা হল, টিসি নিয়ে যেতে।
অথবা অভিভাবক যেন দেখা করে।
ঈশ্বরের অভিভাবক কে ?
তিনি জানেন না। হ্যাঁ, একটা বাচ্চা মেয়ে
তার সঙ্গে থাকে। রেঁধে দেয় সেদ্ধ ভাত।
এর বেশি জোটে না তাদের।
তাহলে মেয়েটি কি তার অভিভাবক ?
তিনি ফিরে এলেন তাদের ঝুপড়িতে। কিছু খড়
দিয়ে চারদিক ঢাকা সেই ঝুপড়িটি।
তার উপর চাঁদের ওড়নাটি এসে পড়েছে কিভাবে,
ফলে, ঝুপড়িকে মনে হচ্ছে এক উড়ন্ত জাহাজ।
ঈশ্বর চিনতে পারলেন না আজ ঝুপড়িটিকে,
পেরিয়ে গেলেন সেই স্থান,
রেল লাইনের পাশে জলসা বসেছে।
সেখানেও নয়, তিনি গেলেন আদিগঙ্গার দিকে...
অভিভাবক না নিয়ে গেলে কাল তাকে টিসি দেবে
কাল থেকে ড্রপ আউটের দলে তিনি...
ভাবতে ভাবতে তিনি নেমে পড়লেন
গঙ্গার থমকে থাকা জলে।
চাঁদের ওড়না ঢেকে ফেলল তাকেও।
৩.
ইতিহাস পড়তে দিও না।
বিশ্বাসঘাতকদের কথা ছাড়া
কিছু নেই সে বইয়ে। যাদের ভাবছ
পরিত্রাতা, তারা সকলেই বাইসাইকেলথিফ
ডানপন্থীদের ঘৃণা কর।
বামপন্থীদের বিশ্বাস কোরো না। তারা সকলেই
চোরাচালানকারী। স্বপ্নগাঁজাখোর।
ঈশ্বরের সঙ্গে দেখা হলে, বল, তার
কিডনি অপারেশন হবে শিগগীর।
আপাতত সে যেন পেচ্ছাপ বন্ধ রাখে।
৪.
অপর একটি শব্দ, যার বিপরীতে
দাঁড়িয়ে রয়েছে পর, অথচ আমরা
কত ভুলভাবে জেনে এসেছি এদের,
যেভাবে জেনেছি নিজের সম্পর্কে, এই
ভুলকেই জানি সত্য বলে !
একদিন এ বিষয়ে ঈশ্বরের মত
জেনে নিতে হবে। কাল মহাবোধি সোসাইটিতে
এ নিয়ে গম্ভীর এক আলোচনা হবে।
ঈশ্বর প্রধান বক্তা। চলে এস তুমি।
* অলঙ্করণ - অরিজিত চট্টোপাধ্যায়