নৈঃশব্দের কথামালা

লিখেছেন:সুজাতা পান্থী সরকার

ইতিহাসের ইতি নেই...

স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ - এর মধ্যে কে আয়ুষ্মান ?

আমাদের প্রতিটি বর্তমান এক লহমায় ভেসে যায় কাল সমুদ্রে। যার নাম অতীত। আর যাকে আমরা ভবিষ্যৎ বলে মনে করি, পুলকিত চিত্তে সে এসে জায়গা করে নেয় বর্তমানের পরিচিত বৃত্তে। কিন্তু তারই বা আয়ু কতটুকু ...এক মুহূর্ত।

এমনটাই চলেছে জনম জনম ...শুধু যাওয়া... শুধু আসা...শুধু স্রোতে ভাসা...। পুনরাবৃত্তির পুনর্নবীকরণ। কিনারাহীন, তটহীন, অন্তহীন এক নিটোল পরিক্রমা। 

এই vicious circle এক অর্থে তো অভিমন্যুর চক্রব্যূহ। যেখান থেকে বের হয়ে আসবার গোপন পথটি - এই গ্রহের মানুষ নামক  অস্তিত্বের কারুর জানা নেই।তাই বাধ্য হয়ে বা ভালবেসে, এই আবর্তন চক্রে আমরা আবর্তিত হচ্ছি প্রতিনিয়ত। 

তাহলে তো একমাত্র সত্য অতীত। নিরন্তর বয়ে চলা অন্তহীন এই কালধারার একমাত্র অভিধা...অতীত।... অতীতের ইতিহাস। যা সদা বহমান। যার কোনো শেষ নেই।

কিন্তু অতীতের কতটুকুই বা আমরা দেখতে পাই? আনমনা হয়ে কূলে বসে থেকে, আমাদের অনুভবে বা দৃষ্টিতে জেগে থাকে শুধু- হিমশৈলের চূড়াটুকু। বাকীটা তো চেতন-অবচেতনের অতলে। 

অবশ্য এই অতীতের বিভঙ্গ একেক জনের কাছে একেক রকম। বুদ্ধদেব বসু মাত্র চল্লিশেই বিলাপ করতেন- 'আমি বুড়ো, প্রায় বুড়ো, কী আছে আমার আর তীব্র তেতো মত্ত স্মৃতি ছাড়া ?' অন্যদিকে প্রতিভা বসুর আত্মজীবনী - স্মৃতি সতত সুখের।

যে যেমন ভাবে দেখে জীবনকে। সেই উপাচারেই  সেজে ওঠে অতীত বীক্ষণ।

আতস কাঁচ না দূরবীণ - কে হবে আমাদের সহায় - এই পর্যালোচনায়। 

অতীতচারী, ফেলে আসা জীবনের দিকে আমরা তাকিয়ে থাকি - তাকিয়েই থাকি... নিতান্ত অভ্যাসে বা আপন মুদ্রাদোষে। 

এর থেকে আমাদের নিষ্কৃতি নেই।

 

0 Comments
Leave a reply