ঝড়ের পরে

লিখেছেন:রুদ্রজিৎ পাল

সাইক্লোন হয়ত এখনও আসেনি - 
অথবা এসে, সব ধ্বংস করে চলে গেছে,
কিংবা, এরকমও হতে পারে যে, একটা ঝাপটা দিয়ে গেছে, 
কিন্তু পরের ঝাপটার প্রস্তুতি চলছে দূরে সমুদ্রের ওপারে কোন গোপন আস্তানায়।
যাই হোক,
এখন সব চুপচাপ-
সমুদ্রের তীরে একটা দুটো তিনটে গাঙচিল বালির মধ্যে খাবার খুঁজছে; 
ঝড়ে যে শুধু সব ভেঙ্গে যায়, তা নয়, 
                    সমুদ্র থেকে উঠে আসে নতুন প্রাণ 
                    নিস্তেজ তারামাছ, ভাঙা শঙ্খ, ঝিনুক -  
জলের নিশ্চিন্ত আশ্রয় থেকে হঠাৎ অচেনা নীল আকাশের নীচে-
                    বোবা, অসহায়; 
                    চারিদিকে শব্দ নেই কোনও  
বাসা ভাঙ্গা পাখিরা ব্যস্ত খুঁজতে নতুন কুটো
                    ভিজে বালির ওপর সমুদ্রের ঢেউ এসে মিলিয়ে যাচ্ছে
                    চুপচাপ 
ঝিঁঝিঁপোকা হয়ত উড়ে গেছে অন্য ঘাসের আশ্রয়ে। 

একটা ভাঙা গাছের গুঁড়ি ঝড়ের ধাক্কায় কোথা থেকে গড়িয়ে এসে 
অর্ধেক ডুবে রয়েছে জলের মধ্যে 
সমুদ্রের দিক থেকে আসা ভেজা বাতাস নিঃশব্দেই চলাচল করছে
                    তার পাতার ফাঁক দিয়ে

সমুদ্রের তীরে স্ক্রুপাইনের গাছ থেকে কমলা রঙের যে ফল
হাওয়ার তাড়সে বালির ওপর ফেটে পড়েছে,
                    ছড়িয়ে গেছে তার বীজ,
সেই বীজ এবার সমুদ্রের জলে ভেসে চলে যাবে বহুদূর-----

তবে একদম শব্দ নেই, সেকথা ঠিক নয়

বালির ওপর কাঁকড়ার পায়ের সরসর শব্দ আছে,
দূরে মাটির মধ্যে গর্তে জল ঢোকার শব্দ আছে
আর আছে এতক্ষণ ঘটে যাওয়া তান্ডবের স্মৃতির শব্দ… 

আমাদের স্মৃতি অনেক শব্দ বহন করে চলে
                    বিধ্বস্ত চরাচরে বাইরের শব্দ থাকে না
পড়ে থাকে শুধু অব্যক্ত আর্তনাদ -- 

 

 

0 Comments
Leave a reply